কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত শহর কক্সবাজার একটি জেলা যা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। তবে কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানার আগে জেনে নিন কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত। বলা যায়, কক্সবাজার তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সমুদ্র সৈকত ও স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে বিখ্যাত।
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম থেকে ১৫২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এবং ঢাকা থেকে যার দূরত্ব ৪১৪ কিলোমিটার।
কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান এর কথা বললেই সবার আগে মনে পড়বে সমুদ্রের কথা৷ কেননা, কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে সমুদ্র সৈকত সবসময় এক নম্বরে থাকবে। কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতের মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্ট বা বীচ আছে যার মধ্যে কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী, ইনানী, হিমছড়ি উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও আছে দরিয়ানগর, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, রামুর বৌদ্ধ বিহার, রাবার বাগান সহ আর-ও অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। আর এসবের মধ্য থেকে কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান এবং সেসব স্থানে কিভাবে যাবেন, সেখানকার মানুষ ও পরিবেশ, খাবারের দাম এবং সেখানে কি কি পাওয়া যায় সহ সবকিছু নিয়েই আজকের এই লেখা।
আরো পড়ুনঃ কক্সবাজার হোটেল লিস্ট 2024
কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান

কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে সবার প্রথমে যে জায়গার নাম আসবে তা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত যার দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বেশ কয়েকটি পয়েন্টে আলাদাভাবে পরিচিত। প্রতিটা পয়েন্টের আলাদা সৌন্দর্য ও পরিচিতি আছে। তাই আমরা আলাদাভাবে পয়েন্টগুলো সম্পর্কে জানবো।
কলাতলী পয়েন্ট
ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে বাসে কিংবা আকাশপথে বিমানে কক্সবাজার আসা যায়। বিমানবন্দর থেকে সিএনজি, টমটম বা অটোরিকশা করে কলাতলী পয়েন্টে আসা যায়। আপনি যদি বাসে করে আসেন, তাহলে বাস আপনাকে কলাতলীর ডলফিন মোড়ে নামিয়ে দিবে, যেখান থেকে আপনি সামনে তাকালে শুধু সমুদ্র দেখতে পাবেন।
কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার ননস্টপ চলাচল করে। যদি ট্রেনে আসেন তাহলে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন থেকে টমটম, সিএনজি বা অটোরিকশা করে কলাতলী পয়েন্টে আসতে পারবেন৷ এসব গাড়ির ভাড়া তুলনামূলক কম। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এসব গাড়ির ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়ায় আপনাকে হয়রানির শিকার হতে হবে না।
সুগন্ধা পয়েন্ট
কলাতলী থেকে হেঁটে কিংবা টমটমে করে আপনি একদম কাছে সুগন্ধা পয়েন্টে যেতে পারবেন। এখানে শামুক, ঝিনুক ও নানা প্রজাতির প্রবাল সমৃদ্ধ বিপণি বিতান ঘুরে দেখতে পারবেন। আপনি যদি কয়েকদিন থাকতে চান, আপনার পছন্দ অনুযায়ী কক্সবাজার হোটেল লিস্ট থেকে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য হোটেল সিলেক্ট করতে পারেন। অর্ধ শতাধিক হোটেলের নাম, ঠিকানা, রুম ভাড়া ও মোবাইল নাম্বার সমৃদ্ধ কক্সবাজার হোটেল লিস্ট।
লাবণী পয়েন্ট
কক্সবাজার পুরাতন সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত লাবণী পয়েন্ট। সমুদ্র দেখতে বাঙালি মাত্রই ছুটে আসেন কক্সবাজারের এই পয়েন্টে। কলাতলী পয়েন্ট থেকে হেঁটে বা রিকশা ও টমটম করে যাওয়া যায় লাবণী পয়েন্টে। এই পয়েন্টে বইপ্রেমীরা পেয়ে যাবেন চমৎকার একটি বইয়ের দোকান ইস্টিশন। এখান থেকে সহজেই শহরের সবখানে আসা-যাওয়া করা যায় যার কারণে আপনি চাইলে এখানের হোটেলে উঠতে পারেন।
হিমছড়ি
কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে হিমছড়ি পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা সৈকত হিমছড়ি। এখানকার পরিবেশ তুলনামূলক নির্জন ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে হিমছড়ি যাওয়ার পথটা রোমাঞ্চকর। এর একপাশে বিস্তৃর্ণ সমুদ্রের বালুকাবেলা আর অন্যপাশে সবুজ পাহাড়। আর মাঝে পিচ ঢালা মেরিন ড্র্রাইভ। হিমছড়ি ঝর্ণা এখানে আসা মানুষের প্রধান আকর্ষণ।
এখান থেকে তাকালে যেমন সমুদ্র দেখা যায়, তেমনি পাহাড়-ও দেখা যায়। কক্সবাজার এর কলাতলী পয়েন্ট বা ডলফিন মোড় থেকে সিএনজি বা চাঁদের গাড়িতে করে হিমছড়ি আসা যায়। একসাথে অনেকজন আসলে চাঁদের গাড়িতে করে হিমছড়ির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। আপনি যদি গাড়ি খুঁজে না পান, তাহলে প্রতিবেশীর কাছ থেকে সেবা নিতে পারেন। তারা আপনার ভ্রমণ সুন্দর ও নিরাপদ করে তুলবে। আপনি থাকবেন নিশ্চিন্তে।
ইনানী
হিমছড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ইনানী সমুদ্র সৈকত। ইনানী সৈকতে রয়েছে প্রবাল পাথর। অনেকটা সেন্টমার্টিনের মতো। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যেমনটা বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে, এখানে তেমনটা হয় না। বেশ শান্ত প্রকৃতির সৈকত ইনানী। জোয়ারের সময় এখানে প্রবাল পাথর দেখা যায় না।
ভাটার সময় বিশাল এলাকা জুড়ে ভেসে উঠে এই প্রবাল পাথর বা চুনাপাথর। প্রবাল পাথরে লেগে থাকে শামুক-ঝিনুকের ভাঙা অংশ যা বেশ ধারালো। এসব প্রবাল পাথরই ইনানীর প্রধান আকর্ষণ। কক্সবাজার কিংবা হিমছড়ি থেকে একইভাবে সিএনজি বা চাঁদের গাড়ি করে এখানে আসা যায়। ইনানীর সূর্যাস্ত আকর্ষণীয়।
সেন্টমার্টিন
বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় সেন্টমার্টিন এর অবস্থান। বিপুল সংখ্যক নারিকেল পাওয়া যায় বলে সেন্টমার্টিনকে স্থানীয়ভাবে নারিকেল জিঞ্জিরা-ও বলা হয়।
বাংলাদেশের যেকোনো স্থান থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে আসতে হবে কক্সবাজার। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন ও বিমানে কক্সবাজার আসা যায়। কক্সবাজার থেকে এরপর বাস বা জিপে চড়ে টেকনাফ এবং টেকনাফ থেকে সি-ট্রাক, জাহাজ কিংবা ট্রলারে করে পৌঁছাবেন সেন্টমার্টিন। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে জাহাজে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। আবার প্রতিদিন বিকালে এসব সাহাজ সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে। শীত মৌসুমে সমুদ্র শান্ত থাকে বিধায় এসময় সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নিরাপদ।
আকাশ ও সমুদ্রের নীল যেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল গাছের সারি সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য। বালি, পাথর, প্রবাল ও জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য চমৎকার অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন। স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল বিশ্বরহস্যের জীবন্ত পাঠশালা সেন্টমার্টিন।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন কক্সবাজার জেলা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে। এর চারদিকে শুধুই পানি। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ সহজ-সরল এবং তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। স্বল্প খরচে পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এই সেন্টমার্টিন দ্বীপে।
টেকনাফ
টেকনাফ কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা। এটি বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। টেকনাফ উপজেলার পূর্ব দিয়ে বয়ে গেছে নাফ নদ। নাফ নদীর নাম থেকে এই অঞ্চলের নাম টেকনাফ।
টেকনাফের দর্শণীয় স্থানগুলোর মধ্যে শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, টেকনাফ সমুদ্র সৈকত, পৌরসভার কাছে থানা প্রাঙ্গণে মাথিনের কূপ, বাংলাদেশ-মায়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাট, টেকনাফ নেচার গেম রিজার্ভ, শিলখালী চিরহরিৎ গর্জনগাছ বাগান, মারিশবনিয়া সৈকত, কুদুমগুহা অন্যতম।
কথিত আছে, ধীরাজ ভট্টাচার্য নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা টেকনাফে কর্মরত ছিলেন। সেসময় থানার কূপ থেকে জল নিতে আসতো স্থানীয় রাখাইন জমিদার কন্যা মাথিন। সেই মাথিনের সঙ্গে তার হৃদয় বিনিময় হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন বাবার অসুস্থতার কথা জানলে কাউকে কিছু না বলে একমাসের ছুটি নিয়ে নিজ জন্মস্থান কলকাতায় ফিরে যান তিনি। একমাস পার হয়ে গেলেও আর চাকরিতে যোগ দেননি তিনি।
মাথিনের কাছে-ও ফিরে আসেন নি। অন্যদিকে মাথিন ধীরাজকে ছাড়া বিরহ যাপন করতেন। একপর্যায়ে অনাহারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ধীরাজের অপেক্ষায় অনাহারে জীবনযাপন করতে করতে পৃথিবী ত্যাগ করেন জমিদার কন্যা মাথিন। পর্যটকদের কাছে মাথিনের কূপ বেশ জনপ্রিয়।
মহেশখালী
কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে সাগরের মাঝে মহেশখালী। বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে আছে হিন্দুদের তীর্থস্থান আদিনাথ মন্দির। পাহাড়ের চূড়ায় এই আদিনাথ মন্দির সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র স্থান। প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো এই প্রাচীন সভ্যতা। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার গোরখঘাটা ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রামে আদিনাথ মন্দির এর অবস্থান।
মহেশখালীর অন্যান্য দ্বীপগুলোও ঘুরে দেখা যেতে পারে। বিশেষত সোনাদিয়া দ্বীপ বাংলাদেশের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। প্যারাদ্বীপ নামে পরিচিতি এই অঞ্চলে আছে ম্যানগ্রোভ বন ও প্যারাবন। এছাড়া এটি বাংলাদেশের প্রধান শুটকি মাছ উৎপাদন কেন্দ্র। মাতারবাড়ী দ্বীপের সমুদ্র সৈকত-ও বেশ সুন্দর। এখানে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হওয়ায় মহেশখালী দ্বীপ ভ্রমণের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। যেকোনো সময় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সেখানকার আবহাওয়ার ব্যাপারে সঠিক খবর নিতে হবে।
রামু
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা বৌদ্ধ বিহারের জন্য বিখ্যাত। ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসার পথে বাইপাস এলাকা দিয়ে যাওয়া যায় রামুর সকল বৌদ্ধ বিহারে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য রামু পবিত্র স্থান। রামকোট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি ১০০ ফুট সিংহশয্যা বৌদ্ধ বিহার ও ভাবনা কেন্দ্র, রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহার, সাদা চিং, লাল চিং, রামু বড় ক্যাং, লামারপাড়া বৌদ্ধ বিহার সহ অসংখ্য ছোট-বড় বৌদ্ধ বিহার নিয়েই রামু৷
স্থানীয় রাখাইন ও বড়ুয়া সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা ও পরিবেশ খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আছে এই রামুতে। আর-ও আছে রাবার বাগান ও ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স এর বাংলো সহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান৷ আপনি যদি বইপ্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন সাহিত্যঘর গণগ্রন্থাগার ও জ্ঞানান্বেষণ পাঠাগার থেকে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং চকরিয়া থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা দক্ষিণ বন বিভাগের ফাসিয়াখালি রেঞ্জের ডুলাহাজারা ব্লকে এর অবস্থান। এ পার্কে মুক্ত পরিবেশে হাঁটাচলা করা যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়ানো যায় অনায়াসে। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে বাসযোগে সহজেই আসা যায় এখানে কক্সবাজার এর আগেই এর অবস্থান।
এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো কক্সবাজারের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান এর পর্ব। কক্সবাজার সম্পর্কে আর-ও জানতে পড়তে পারেন কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত এবং কক্সবাজার হোটেল লিস্ট থেকে খুঁজে নিতে পারেন আপনার নিরাপদ হোটেল।