বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ভ্রমণ কম বেশী সকলের কাছে অনেক বেশী আগ্রহের বিষয়। তাই কক্সবাজার ট্যুর প্লান নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকে কিভাবে কি করবে, কোথায় যাবে, কি খাবে এই সব নিয়ে। তাই আপনাদের কষ্ট কিছুটা হলে ও দূর করতে আমরা চেষ্টা করবো আপনার কক্সবাজার ট্যুর প্লানকে সহজ করে দিতে।
আশা করি আমাদের দেয়া ট্যুর প্লানটি আপনার উপকারে আসবে। কারণ আমাদের এই ট্যুর প্লানটি কক্সবাজারের সুপরিচিত ট্যুর অপারেটর প্রতিবেশী’র মাধ্যমে করা। যারা দীর্ঘ বছর ধরে কক্সবাজারে পর্যটকদের সেবা দিয়ে আসছে৷ তাই আশা করি আপনাদের জন্য পারফেক্ট একটা ট্যুর প্লান হবে।
ভ্রমণের সময় সূচি (২ রাত ৩ দিন):
প্রথম দিন – কলাতলি, সুগন্ধা,লাবণী সমুদ্র সৈকত :
- সকালের দিকে কক্সবাজার পৌঁছান।
- হোটেল চেক ইন করুন ও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।
- এরপর সমুদ্রে স্নান করতে যেতে পারেন আর না হলে ঐ সময় ও রেস্ট নিতে পারেন।
- এরপর দুপুরের খাবার খেতে পারেন। স্থানীয় টেডিশনাল খাবার বা বাঙালি খাবার খেতে পারেন ৷
- এর পর বিকেলের দিকে কলাতলি, সুগন্ধা বা লাবণী পয়েন্ট সমুদ্র সৈকত গুলোতে ঘুরাঘুরি বা হাটাহাটি করতে পারেন।
- বিকেলে তারপর সূর্যাস্থ উপভোগ করুন সী বীচের মধ্যে।
- এরপর চাইলে সন্ধায় বীচ সীটে বসে সমুদ্রের ঢেউ এর গর্জন উপভোগ করতে পারেন। অথবা চাইলে স্থানীয় দোকান গুলো থেকে কিছু খেয়ে নিতে পারেন।
- আবারো চাইলে এরপর সমুদ্রের পাড়ে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
- এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন না হয় রাতের সমুদ্র ও উপভোগ করতে পারেন।
দ্বিতীয় দিন – মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি, ইনানী পাটুয়ারটেক, রামুর বৌদ্ধ বিহার:
- সকালে নাস্তা করে রিজার্ভ গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।
- মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে হিমছড়ি দেখতে পারেন।
- এরপর ইনানী সমুদ্র সৈকত এর সময় কাটান। সেখানে এর বিশেষত্ব পাথর গুলো দেখতে পাবেন যদি পানি কম থাকে। সেখানে বসে বা দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারবেন।
- ইনানী বীচে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে পাটুয়ারটেক যাবেন।
- এরপর উখিয়া হয়ে রামুর বৌদ্ধ বিহার।
- রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার।
- লামার পাড়া কাঠের বৌদ্ধ বিহার।
- ১০০ ফুট বুদ্ধ মূর্তি।
- দুপুরের খাবার রামুর বিখ্যাত চা বাগানে খেতে পারেন। যা খুবই পরিচিত ও নাম করা ৷
- এর পর বিকেলে কক্সবাজারে ফিরে হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেন।
- তারপর সন্ধ্যায় নাস্তা করে বীচের দিকে যেতে পারেন।
- এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন। অথবা চাইলে রাতের বীচ ভিউ উপভোগ করতে পারবেন।
তৃতীয় দিন বা শেষ দিন:
- সকালের নাস্তা করে কেনাকাটার জন্য বের হতে পারেন।
- এরপর হোটেল চেক আউট করে খাবার খেয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন।
২ রাত ৩ দিনের কক্সবাজার ট্যুর প্লান এর খরচ:
এই ট্যুর প্লানটি এমন ভাবে করা যাতে অল্পদিনে কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখা যায় মতো। সাধারণত রামুর দর্শনীয় স্থান গুলো দেখতেই ১ দিন লেগে যায়। তাই আপনারা চাইলে এই প্লানটি আপনাদের মতো করে তৈরী করে ও নিতে পারবেন৷
আমরা চেষ্টা করেছি কম সময়ের মধ্যে কিভাবে সকল কিছু উপভোগ করা যায় বা দেখা যায় তা নিয়ে কক্সবাজার ট্যুর প্লান দিতে। আমাদের দেয়া কক্সবাজার ট্যুর প্লানটি আপনি যদি ২ জন নিয়ে করতে চান তাহলে আপনাদের ১০/১২ হাজার এর মতো খরচ হতে পারে। সব কিছু মিলিয়ে। ( ব্যক্তিগত কেনাকাটা ছাড়া)
আবার যদি পরিবার নিয়ে বা সদস্য সংখ্যা বেশী হলে তখন খরচ হবে ১৬/১৭ হাজার এর মতো। আসলে খরচ নির্ভর করবে আপনাদের চলাফেরা বা খরচ করার উপায় এর মাধ্যমে।
তাছাড়া কোন ধরনের রুমে থাকছেন, কোন ধরনের খাবার খাচ্ছেন, কোন ধরনের যানবাহন ব্যবহার করছেন এইসবের উপর।
করণীয় ও পরামর্শ:
- রোদে কক্সবাজার আসলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন ও টুপি রাখবেন।
- চেষ্টা করবেন হোটেল আগে থেকে বুকিং করতে।
- যেকোনো কিছুতে আগে থেকে দরদাম করবেন।
- একা বা নির্জন জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন ৷
- সবসময় প্রয়োজনীয় নাম্বার ও প্রশাসনের নাম্বার সাথে রাখবেন।
Faq – প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন:
- কক্সবাজার ট্যুর দিতে কত টাকা লাগে?
২-৩ দিনের জন্য জনপ্রতি ৪০০০-৫০০০ টাকা মতো লাগবে।
- কোন সময়ে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়া ভালো?
ছুটির দিন ছাড়া অন্য সময় গুলোতে ভালো হয়। তখন কোলাহল কম থাকে ও সবকিছুর দাম ও কম থাকে।
কক্সবাজার ট্যুর প্লান টি একদম সহজ ও কম দামে ভ্রমণ করা যায় সেই ভাবে করা হয়েছে। তবে আপনি চাইলে আপনার মতো করে এটি তৈরী করতে পারবেন। আপনি যদি চান কক্সবাজারের ট্যুর অপারেটর প্রতিবেশী’র মাধ্যমে ট্যুর প্যাকেজ নিবেন বা কক্সবাজারে ভ্রমণ বিষয়ক সেবা গুলো নিবেন তাহলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
